ফুলবাড়ি কয়লাক্ষেত্রের অনুসন্ধান লাইসেন্স ও মাইনিং লীজধারী এশিয়া এনার্জির প্যারেন্ট কোম্পানি জিসিএম রিসোর্সেস কয়লাখনি উন্নয়নে সরকার ও স্থানীয় মানুষের সঙ্গে গভীরভাবে কাজ করে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
গত ১৮ ডিসেম্বর লন্ডনে অনুষ্ঠিত কোম্পানীর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) সভায় জিসিএম রিসোর্সেস এর চেয়ারম্যান দাতো মাইকেল ট্যাং এ অঙ্গীকারের কথা জানান।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়ান সফল ব্যবসায়ী মাইকেল ট্যাং বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কোম্পানির চেয়ারম্যান হিসাবে পুন:নির্বাচিত হয়েছেন বলে কোম্পানীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার জানানো হয়।
দাতো মাইকেল ট্যাংবলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার কয়লা থেকে ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উদ্যোগ নিয়েছে জিসিএম এর সাবসিডিয়ারী কোম্পানি এশিয়া এনার্জি’র মাধ্যমে এর অংশ হতে চায়।
বৃহদাকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারি সিদ্ধান্ত, গতসপ্তাহে প্রকাশিত জাতিসংঘ মানব উন্নয়ন রিপোর্ট ২০১৫ এর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
সরকারের ইতিবাচক কার্যক্রম সত্ত্বেও এ রিপোর্টে বিশ্বের ১৮৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪২তম। মানব উন্নয়ন সূচকে জ্বালানি ব্যবহারের গভীর যোগসূত্র থাকায় মধ্যম আয়ের দেশ বা এর উর্দ্ধে ওঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে হবে যা শিল্পবিপ্লব তরান্বিত করে বৃহত্তর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে।
জিসিএম চেয়ারম্যান এশীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নেবর্তমান ও ভবিষ্যতেকয়লার জোরালো ভূমিকার কথা উল্লেখ করে উদাহরণসহ বলেন, বিশ্বের ২৭টি দেশে চীনের সরকারি সংস্থাগুলো ৯২টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উন্নয়ন করছে যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১০৭ গিগাওয়াট।
এসব প্রকল্পের বেশিরভাগ অর্থসহায়তা করছে চীনা এক্সিম ব্যাংক। দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান তাদের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছে আর ভারত ঘোষণা করেছে দেশটি ২০২০ সালের মধ্যে কয়লা উৎপাদন দ্বিগুণ করতে মাসে একটি করে কয়লাখনি চালু করার পর্যায়ে রয়েছে।
সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে, চীন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া মিলে বিশ্বের নতুন আহরিত কয়লার ৭১ শতাংশ ব্যবহার করছে এবং পাকিস্তান, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামের মতো দেশ শীঘ্রই এশীয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে হার ৮০ শতাংশে নিয়ে যাবে।
ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র বিপর্যয়ে পারমাণিক কার্যক্রম হ্রাসের প্রেক্ষিতে জাপান আগামী একদশকে ৪১টি নতুন কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লা সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক জ্বালানি হওয়ার কারণে দেশে দেশে এসব কার্যক্রম চলছে আর উন্নয়নশীল দেশের জন্য এটা আরও গুরুত্বপূর্ণ।
জিসিএম এর প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ প্রতিনিধি গ্যারি লাই এজিএম যোগদানশেষে রবিবার লন্ডন থেকে ঢাকা ফিরে বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হলেও কার্বন ডাই অক্সাইডসহ গ্রীণ হাউস গ্যাসের উল্লেখযোগ্য নির্গমণকারী নয়।
বাংলাদেশের মাথাপিছু কার্বন ডাই্ অক্সাইড নি:সরণের মাত্রাঅঞ্চলের অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। এমনকি ফূলবাড়ি প্রকল্পে ৪ হাজার মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরও বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম কম কার্বন নির্গমণকারী দেশ হিসাবে থাকবে।